জৈন্তাপুর প্রতিনিধি : সিলেটের জৈন্তাপুরে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিয়মিত গণশুনানি অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এতে উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নের সাধারণ মানুষ তাদের বিভিন্ন ব্যক্তিগত ও সমষ্টিগত কিংবা সামাজিক বিভিন্ন সমস্যাদি লিখিত বা সরাসরি মৌখিকভাবে উপস্থাপন করার সুযোগ পাচ্ছেন।
গণশুনানিতে বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে ভুক্তভোগীদের কথা শোনেন জৈন্তাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে সালিক রুমাইয়া। প্রতিদিন গুরুত্বপূর্ণ কাজের ফাঁকে নিজ দপ্তরে বসে গণশুনানির কার্যক্রম পরিচালিত করছেন তিনি।
গণশুনানিতে অংশ নেয়া বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সমস্যাদি যার মধ্যে অন্যতম ভূমি সংক্রান্ত, বিশুদ্ধ পানি ও পয়নিষ্কাশন, জাতীয় পরিচয়পত্র, জন্ম নিবন্ধন সংশোধন সংক্রান্ত, হতদরিদ্র মেধাবী শিক্ষার্থীদের সহায়তা সংক্রান্ত, কৃষি, প্রাণিসম্পদ বিষয়ক, সরকারি আবাসনে থাকা মানুষের সমস্যাদি, কমিউনিটি চিকিৎসা সংক্রান্ত, পরিবেশ ও নদীভাঙন বিষয়ে, বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের দাবি সংক্রান্ত ও ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সমসাময়িক বিভিন্ন বিষয়ে তথ্যাদি তুলে ধরা হয়।
বুধবার সকাল ১১টায় সরেজমিনে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দপ্তরে গিয়ে গণশুনানির কার্যক্রম পরিচালিত হতে দেখা যায়। এ সময় নিজপাট ইউনিয়নের নাগরিক সত্তরোর্ধ্ব এক বৃদ্ধা তার নিজের ভূমি সংক্রান্ত সমস্যা শুনানিতে উপস্থাপন করেন। একই দিনে জৈন্তাপুর ইউনিয়নের মোকামবাড়ী এলাকার কয়েকজন ব্যক্তি স্থানীয় পরিবেশ সংক্রান্ত বিষয়ে একটি আবেদন নিয়ে আসেন। এ সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শুনানিতে উপস্থিত থাকা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফারজানা আক্তার লাবনীকে অভিযোগ দুটি তদন্ত সাপেক্ষে কার্যকর ব্যবস্হা গ্রহণের নির্দেশনা প্রদান করেন।
এ সময় উপজেলার একটি মাধ্যমিক স্কুলের ৮/১০ জন শিক্ষার্থী তাদের স্কুলের সুপেয় পানি ও শৌচাগার সমস্যা নিয়ে মৌখিকভাবে নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে অভিযোগ তুলে ধরলে তিনি খুব শিগগির স্কুল পরিদর্শন করবেন বলে জানান। সেই সাথে উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা প্রদান করেন।
নিয়মিত গণশুনানির বিষয়ে জৈন্তাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে সালিক রুমাইয়া বলেন, কেবিনেটের নির্দেশনা মোতাবেক প্রতি বুধবার গণশুনানির আয়োজন করতে নির্দেশনা রয়েছে। তবে জৈন্তাপুরে প্রতিদিন সংক্ষিপ্ত পরিসরে হলেও গণশুনানি অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, জনগণের দোরগড়ায় সরকারি সেবা পৌঁছে দেওয়া এবং নাগরিক সেবা প্রদানের মান ও গতি বৃদ্ধির লক্ষ্যে মূলত এই গণশুনানি অনুষ্ঠিত হচ্ছে। শুধু সেবা প্রত্যাশীরাই নয়, বরং সরকারি সকল সেবা সম্পর্কে ধারণা নিতে ও এর সুফল পেতে সাধারণ মানুষ এই গণশুনানিতে প্রতি বুধবার অংশ নিতে পারবেন।
যেহেতু গণশুনানির মাধ্যমে বিভিন্ন সমস্যাদি স্বল্প সময়ের মধ্যে সমাধানে কাজ করছে প্রশাসন, তাই এর সুফল সম্পর্কে সাধারণ মানুষকে ধারণা পৌঁছে দিতে উপজেলার সর্বস্তরের জনগণ ও গণমাধ্যমকর্মীদের কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন জৈন্তাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে সালিক রুমাইয়া।