নিজস্ব প্রতিবেদক : বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এডভোকেট আহমদ আযম খান বলেছেন, দেশকে নিয়ে দেশী বিদেশী ষড়যন্ত্র চলছে, ভারত সংখ্যালগুদের না কি নির্যাতন করা হচ্ছে বলে অপপ্রচার চালাচ্ছে। বাংলাদেশ সকল ধর্মের মানুষ নিরাপদে সহাবস্থান করছে। চক্রান্তকারীরা বিজয়ের চেতনাকে নৎসাত করার ষড়যন্ত্র করছে। তাই আমাদেরকে সচেতন থাকতে হবে, যাতে বিজয়ের চেতনা ও জাতীয় ঐক্যকে কেউ যেন নৎসাত করতে না পারে। আমরা অকুণ্ঠ ভাবে ড. ইউনুস সরকারকে সমর্থন দিয়েছি, তার নেতৃত্বে ধর্মবর্ণ-দলমত নির্বিশেষে আমরা জাতীয় ঐক্য তৈরি করেছি। আমরা অবিলম্বে আমরা জাতীয় সংসদ নির্বাচন দাবি করছি। মানুষ জাতীয় নির্বাচন চায়, মানুষ ভোট দিতে চায়। জাতীয় নির্বাচন বিলম্ব হলে জাতীয় ঐক্য ও গণতান্ত্র, বিপ্লবে ব্যাহত হতে পারে। আগে জাতীয় নির্বাচন দিন, পরে থানীয় নির্বাচন হবে।
সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) সিলেট রেজিস্ট্রারী মাঠে বিজয় শোভাযাত্রা পূর্ব সংক্ষিপ্ত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিমি আরো বলেন, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সূতিকাগার এই সিলেট। ১৯৭১ সালের ১৫ ই ডিসেম্বর তৎক্ষালীন কর্নেল জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে সিলেট শত্রুমুক্ত হয়েছিল। স্বাধীনতার ঘোষনা দেয়া থেকে শুরু করে সেই রণাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের অবদানকে মুছে দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। আমাদের নেত্রী বেগম খালেদ জিয়া দীর্ঘ ৯ বছর স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে আন্দোলন-সংগ্রাম করে গণতন্ত্রকে মুক্ত করেছিলেন। আমাদের নেতা তারেক রহমান দীর্ঘ ১৫ বছর গণতন্ত্রকে পুনরুদ্ধার করার জন্য রাজপথে লড়াই করেছেন। যার ফলে ছাত্রজনতার গণঅভ্যুত্থানে ফ্যাসিবাদ দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। বিগত ৫ আগষ্ট যে বিজয় হয়েছে তার মুল নায়ক ছিলেন তারেক রহমান। তাই জিয়া পরিবারকে দেশের মানুষের হৃদয় থেকে মুছে দেয়া যাবে না।
সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরীর সভাপতিত্বে, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরী ও মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নজিবুর রহমান নজিবের সভাপতিত্বে সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির ও আরিফুল হক চৌধুরী, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ্ সিদ্দিকী।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির বলেন, ১৯৭১ সালের ১৫ ডিসেম্বর নিজে নেতৃত্ব দিয়ে সিলেটকে মুক্ত করেছিলেন। তাই আমরা সিলেটবাসী কৃতজ্ঞতচিত্তে তাকে স্মরণ করছি। তিনি স্বাধীনতার ঘোষনা দিয়ে নিজে যুদ্ধ করে দেশকে স্বাধীন করেছিলেন। এর পর একটি যুদ্ধবিদ্ধস্ত দেশকে মাত্র কয়েক বছরের মধ্যে সমৃদ্ধের দিকে নিয়ে ছিলেন। তার সুযোগ্য সন্তান তারেক রহমানের নেতৃত্বে আমরা দেশকে সমৃদ্ধের দিকে নিতে চাই। তাই বিজয়ের এই দিনে নতুন করে দেশ গড়ার প্রতিজ্ঞা নিতে হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, শহীদ জিয়া স্বাধীনতার ঘোষনা দিয়েছিলেন বলেই আমরা এই উৎসব করতে পারছি। তার সকল ষড়যন্ত্রকে মোকাবেলা করে এই বিজয়কে রক্ষা করতে হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ্ সিদ্দিকী বলেন, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষনা দিয়ে রণাঙ্গনে যুদ্ধ করে আমাদেরকে লাল সবুজের পতাকা এনে দিয়েছিলেন। জুলাই-আগস্টে দেশের মানুষ জীবন দিয়ে এই বিজয়কে রক্ষা করেছে।
সভাপতির বক্তব্যে সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, শহীদ জিয়ার স্বাধীনতার ঘোষনার মধ্য দিয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়েছিল। তিনি রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে থাকাকালিন সময়ে দেয়ের প্রত্যন্ত অঞ্চল চষে বেড়িয়েছিলেন। শহীদ জিয়া স্বনির্ভর বাংলাদেশ গড়ার কাজ শুরু করেছিলেন। তাই শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও বাংলাদেশ সমার্থক। বাংলাদেশের ইতিহাস আর শহীদ জিয়া একই সূত্রে গাঁথা। বিগত সাড়ে ১৫ বছর ইতিহাস বিকৃতি করা হয়েছে। পাঠ্যপুস্তকে মুক্তিযুদ্ধের ভুল ইতিহাস লেখা হয়েছে। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের নাম মুছে দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। জনতার হৃদয় থেকে শহীদ জিয়ার নাম মুছে দেয়া যাবে না।
সমাবেশের শুরুতেই স্বাগত বক্তব্যে সিলেট মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সিলেট সিটি কর্পোরেশনের সাবেক প্যানেল মেয়র রেজাউল হাসান কয়েস লোদী বলেন, দেশের মানুষ দীর্ঘ ১৭ বছর পর স্বাধীন ভাবে বিজয় দিবস উদযাপন করছে। ফ্যাসিস আওয়ামী লীগ জনগণের সকল গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নিয়ে ছিলে। যা দীর্ঘ দিনের আন্দোলন সংগ্রামে মধ্যদিয়ে ফিরে পেয়েছে দেশের মানুষ। সমাবেশের শুরুতে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত করেন জেলা ওলামা দলের আহবায়ক মাওলানা নুরুল হক।
সমাবেশ থেকে একটি বিশাল বিজয় শোভাযাত্রা নগরীর প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গিয়ে শেষ হয়। শোভাযাত্রাতে রং বেরংয়ের ফেস্টুন, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান, চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ছবি, জাতীয় ও দলীয় পতাকা নিয়ে বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের কয়েক হাজার নেতাকর্মী অংশ নেন।
এর আগে পূর্ব ঘোষনা অনুসারে সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন সিলেট জেলা ও মহানগর বিএনপির নেতৃবৃন্দ।