নিজস্ব প্রতিবেদক : সিলেটের শাহ পরাণ থানা পুলিশের পৃথক তিনটি অভিযানে ৬২৯ বস্তা চোরাই চিনি জব্দ করেছে। এরমধ্যে বস্তা বদল করে ভারতীয় চিনি আড়াল করার কৌশল ছিল। এ কৌশলের সঙ্গে জড়িত তিনজন বাহককেও এসংক্রান্ত তিনটি পৃথক মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের (এসএমপি) মিডিয়া সেলের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন এসএমপির এডিসি (মিডিয়া) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সোমবার সিলেটের শাহ পরাণ থানাধীন সুরমা বাইপাস পয়েন্টের সিলেট-তামাবিল মহাসড়কের দাসপাড়ায় টহলরত পুলিশের উপস্থিতি দেখে একটি ট্রাক ফেলে চালক ও সহকারী দৌঁড়ে পালিয়ে যায়। পুলিশ ট্রাকটি (নম্বর: ঢাকা মেট্রো-ট-১৫-৯২৬৫) তল্লাশি করে ত্রিপল দিয়ে মোড়ানো অবস্থায় ২৯৭ বস্তা ভারতীয় চিনি জব্দ করে। মোট ১৪ হাজার ৫৫৩ কেজি চিনির মূল্য প্রায় ১৭ লাখ ৪৬ হাজার ৩৬০ টাকা।
একই থানায় গত শনিবার পীরের বাজারে পুলিশের অস্থায়ী চেকপোস্টে ধরা পড়ে একটি কাভার্ডভ্যান। তল্লাশি চালিয়ে ৩০০ বস্তা চোরাই চিনি জব্দ করা হয়। ৩০০টি বস্তায় ১৫ হাজার কেজি ভারতীয় চিনি চোরাই পথে আনা হয়েছিল। চিনির মূল্য প্রায় ১৮ লাখ টাকা। চোরাই চিনির সঙ্গে চোরাচালানির বাহক হিসেবে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরা হলেন, জামালপুর জেলার মেলান্দহের সুলতানখালি গ্রামের মোনতাজ আলী (৪০), রাজশাহীর কাটাখালির শমসাদিপুরের মো. রায়হান (৩৫) ও রাজ আলী (১৮)। চোরাই চিনির সঙ্গে কাভার্ডভ্যানও (নম্বর : ঢাকা মেট্রো-ট-২৪-৮৩০০) জব্দ করা হয়েছে।
গ্রেপ্তররা নিজেদের বাহক উল্লেখ করে পুলিশকে জানিয়েছে, চিনির মালিক সুনামগঞ্জের বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার মাজাইর গ্রামের মো. আমিনুল হক (৫৫)। তার মাধ্যমে ভারতীয় চিনি বাংলাদেশে এনে বিক্রির পরিকল্পনা করছিলেন। চিনির বস্তাগুলো পরিবর্তন করে বাংলাদেশি লেখা সম্বলিত বস্তায় প্যাকেটজাত করা হয়েছিল। যাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দেওয়া যায়।
এর আগে গত শুক্রবার রাতে শাহ পরাণ থানাধীন শাহপরাণ (রহ.) মাজার গেটের সামনে থেকে একটি মিনি পিকআপ তল্লাশি চালিয়ে ৩২ বস্তা চোরাই চিনি জব্দ করা হয়। চোরাই চিনি পরিবহনে ব্যবহৃত মিনি পিকআপ (নম্বর: সিলেট মেট্রো-ন-১১-১৫০৭) জব্দ করা হয়েছে। এসব চিনিও বস্তা বদল করা ছিল। বস্তায় চিনির বদলে লেখা ছিল ‘বাংলায় বাজারের সেরা স্পেশাল চাউল জোড়া টিয়া পাখি মার্কা’। প্রতি বস্তার ৪৯ কেজি করে মোট এক হাজার ৫৬৮ কেজি ভারতীয় চিনি জব্দ করা হয়। এর বাজার মূল্য প্রায় ১ লাখ ৮৮ হাজার ১৬০ টাকা।
এডিসি মিডিয়া মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, বস্তা বদল কৌশলটি নতুন। পুলিশ নজরদারি করে এ কৌশলটি ধরেছে। তিনটি অভিযানের পর শাহ পরাণ থানায় পুলিশ বাদী হয়ে তিনটি মামলা করেছে। আটক তিনজনকে মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে রবিবার আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।