
{"remix_data":[],"remix_entry_point":"challenges","source_tags":[],"origin":"unknown","total_draw_time":0,"total_draw_actions":0,"layers_used":0,"brushes_used":0,"photos_added":0,"total_editor_actions":{},"tools_used":{"square_fit":1},"is_sticker":false,"edited_since_last_sticker_save":true,"containsFTESticker":false}

নিউজ ডেস্ক :
সাবেক সচিব ও প্রাইভেটাইজেশন কমিশনের প্রাক্তন চেয়ারম্যান ইনাম আহমদ চৌধুরী (৮৭) আর নেই (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। সোমবার বিকালে রাজধানীর বনানীস্থ বাসভবনে ইন্তেকাল করেন তিনি। মৃত্যুর বিষয়টি মানবজমিনকে নিশ্চিত করেছেন মরহুমের সহোদর সাবেক পররাষ্ট্র উপদেষ্টা রাষ্ট্রদূত ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী। তিনি জানান, মরহুমের একমাত্র কন্য ও স্বজনরা বিদেশে থাকেন। তারা বর্তমানে দেশের পথে রয়েছেন। এখন পর্যন্ত সিদ্ধান্ত হচ্ছে শুক্রবার বাদ জুমা গুলশান আজাদ মসজিদে তার জানাজা এবং পরবর্তীতে দাফন সম্পন্ন হবে। আমলা থেকে রাজনীতিবিদ ইনাম আহমদ চৌধুরী ১৯৩৭ সালের ২৯শে জুন আসাম প্রদেশের অন্তর্গত সিলেট জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তার পৈতৃক নিবাস সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার বারকোট গ্রামে। ঐহিত্যবাহী এক মুসলিম পরিবারে জন্ম নেয়া ইনাম চৌধুরীর বাবা গিয়াস উদ্দিন আহমদ চৌধুরী ছিলেন ঢাকার বিভাগীয় কমিশনার। মা রফিকুন্নেছা খাতুন চৌধুরী। ইনাম তৎকালীন বৃটিশ ভারতের আসামের শিলংয়ে শিক্ষা জীবন শুরু করেন। ১৯৫২ সালে মেট্রিকুলেশন পাস করে ভর্তি হন ঢাকা কলেজে। ১৯৫২-৫৩ সালে ঢাকা কলেজ ছাত্র সংসদের জেনারেল সেক্রেটারি থাকাকালে শহীদ মিনার নির্মাণ ও রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন সম্পর্কিত কর্মকাণ্ডের জন্য কলেজ থেকে বহিষ্কৃত হন। ১৯৫২-৫৩ সালে ঢাকা কলেজ ছাত্র-সংসদের সাধারণ সম্পাদক থাকাকালে শহীদ মিনার নির্মাণ ও রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন সম্পর্কিত কর্মকাণ্ডের জন্য কলেজ থেকে বহিষ্কৃত হন। অবশ্য এতে পড়াশোনায় বেশ বেগ পেতে হয়নি। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতি, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ও আইনে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। পরবর্তীতে যান অক্সফোর্ডে। সেখান থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৬০ সালে সিভিল সার্ভিস অব পাকিস্তানে যোগ দেন। বাংলাদেশ আমলে সচিব হিসেবে অবসরে যান। ১৯৯৯ সালে (তখন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায়) তিনি বিএনপি’র রাজনীতিতে যুক্ত হন। ২০০১ সালের বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার আমলে প্রাইভেটাইজেশন কমিশনের চেয়ারম্যান হন। পরে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এবং দলের ভাইস চেয়ারম্যানসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন। বিএনপিতে দীর্ঘদিন নিষ্ক্রিয় থাকার পর ২০১৮ সালে তিনি আওয়ামী লীগে যোগ দেন। দলটির ২০তম জাতীয় কাউন্সিলে তাকে উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য করেন শেখ হাসিনা। আলোকিত পরিবারের সন্তান মিস্টার চৌধুরী ৪ ভাই দুই বোন। বড় ভাই রাষ্ট্রদূত ফারুক চৌধুরী ছিলেন সাবেক পররাষ্ট্র সচিব। ছোট দুই ভাই সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা রাষ্ট্রদূত ইফতেখার আহমদ চৌধুরী এবং রাষ্ট্রদূত মাসুম আহমদ চৌধুরী। দুই বোনের একজন নিনা আহমেদ চৌধুরী। ভগ্নিপতি ওয়ান ইলেভেন পরবর্তী ঘটনাবহুল তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ফখরুদ্দিন আহমদ (হারুন)। বর্ণাঢ্য জীবনের অধিকারী ইনাম আহমেদ চৌধুরী দেশ- বিদেশে দেশ জাতির কল্যাণে অনেক কাজ করেছেন। ব্যাংককে জাতিসংঘের ‘এস্কাপ’ কমিশনের সেক্রেটারি, আই.ডি.বি’র ভাইস প্রেসিডেন্ট, লন্ডনস্থ ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম অর্গানাইজেশন (আই.এম.ও) নির্বাচিত সভাপতি। লন্ডন মিশনে ইকোনমিক মিনিস্টার পদে থাকাকালে বৃটেনে অর্থনৈতিক প্রতিনিধিবর্গের এসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব হিসেবে বিশ্বব্যাংক ও এ.ডি.বি’র বিকল্প গভর্নর ও পরবর্তীতে প্রাইভেটাইজেশন কমিশনের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন। দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে অবদানের জন্য রাশিয়া থেকে তিনি ‘লিজিয়ন অব অনার’ সম্মাননা পদক পান। তিনি কমনওয়েলথ সোসাইটি অব বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট এবং ঢাকাবাসী সংগঠনের প্রধান উপদেষ্টা ও বাংলাদেশ-চীন গণমৈত্রী সমিতির উপদেষ্টা ছিলেন।
উল্লেখ্য, ইনাম আহমেদ চৌধুরী ও তার আলোকিত ৩ ভাইকে নিয়ে প্রতিবেদন করেছিল যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী দৈনিক নিউ ইয়র্ক টাইমস।