অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের শাসনামলে আগামী ১৬ ফেব্রুয়ারি প্রথম জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। সম্মেলনে ডিসিরা জনবিশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে মারণাস্ত্র ও ছররা গুলির ব্যবহার নিষিদ্ধ করার প্রস্তাব দেবেন। পাশাপাশি, সার্কিট হাউজ, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, জেলা ও দায়রা জজ আদালত, পুলিশ সুপারের কার্যালয়, জেলা প্রশাসকের বাসভবনকে কেপিআই নিরাপত্তায় অন্তর্ভুক্তকরণের প্রস্তাবও থাকবে।
জানা গেছে, সাম্প্রতিক গণঅভ্যুত্থানের অভিজ্ঞতা থেকে ছররা গুলির ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে ডিসিরা মতামত দিয়েছেন এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ এ বিষয়ে মতামত তৈরি করেছে।
ডিসি ও বিভাগীয় কমিশনারদের সঙ্গে সরাসরি মতবিনিময় ও প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়ার জন্য এই তিন দিনব্যাপী সম্মেলন ১৬-১৮ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে। এটি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রথম ডিসি সম্মেলন। এর আগে, মার্চে অনুষ্ঠিত সর্বশেষ ডিসি সম্মেলন ছিল চার দিনব্যাপী।
সম্মেলনের কার্য অধিবেশন ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হবে। তবে বিকল্প ভেন্যুও বিবেচনায় রয়েছে। ১৬ ফেব্রুয়ারি সকাল ১০টায় প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন। এতে ডিসিরা বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সঙ্গে কার্য-অধিবেশন, প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে মুক্ত আলোচনা, রাষ্ট্রপতি ও প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। তবে জাতীয় সংসদ কার্যক্রম না থাকায় স্পিকারের সঙ্গে মতবিনিময় হবে না।
এবারের সম্মেলনে মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীদের পরিবর্তে উপদেষ্টারা উপস্থিত থাকবেন। ডিসিরা মাঠ প্রশাসনের সমস্যা নিয়ে লিখিত প্রস্তাব দিচ্ছেন এবং তাৎক্ষণিক প্রস্তাবও তুলবেন। কার্য অধিবেশনগুলোতে সভাপতিত্ব করবেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. শেখ আব্দুর রশিদ।
ডিসিরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বার্ষিক গোপনীয় প্রতিবেদন তাদের নিয়ন্ত্রণে রাখা, গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোকে কেপিআই নিরাপত্তায় অন্তর্ভুক্ত করা ও বাধ্যতামূলক বডি ক্যামেরা ব্যবহারের প্রস্তাব দিয়েছেন। মন্ত্রণালয় এসব প্রস্তাবের বিষয়ে মতামত দিয়ে চিঠি পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে।
প্রতি বছর ডিসি সম্মেলন সাধারণত জুলাইয়ে হতো, তবে রাজনৈতিক পরিবর্তনের কারণে এবার তা ফেব্রুয়ারিতে হচ্ছে। করোনা মহামারির কারণে ২০২০ ও ২০২১ সালে সম্মেলন হয়নি, ২০২২ ও ২০২৩ সালে জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
এবারের ডিসি সম্মেলন অতীতের যেকোনো সম্মেলন থেকে ব্যতিক্রম। অতীতে রাজনৈতিক দলের নির্দেশনা থাকলেও এবার তা নেই, কারণ বর্তমান সরকার রাজনৈতিক দলের নয়।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের যুগ্মসচিব মোহাম্মদ খোরশেদ আলম খান জানিয়েছেন, সব কিছু ঠিক থাকলে ১৬ ফেব্রুয়ারি সকাল ১০টায় প্রধান উপদেষ্টা শাপলা হলে সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন। কার্য অধিবেশন ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হবে, তবে পরিবর্তন হলে জানিয়ে দেওয়া হবে।