
ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তির শর্ত লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছে। এর জেরে পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তি স্থগিত রাখার ঘোষণা দিয়েছে গোষ্ঠীটি। সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) এক বিবৃতিতে এই ঘোষণা দেওয়া হয়, যা ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স নিশ্চিত করেছে।
সামনের শনিবার আরও কয়েকজন ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল হামাসের। গত তিন সপ্তাহের মতো এবারও বন্দি বিনিময়ের আওতায় ইসরায়েলি কারাগারে থাকা ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তি পাওয়ার কথা ছিল।
হামাসের আকস্মিক ঘোষণার পর তেল আবিবের ‘জিম্মি চত্বর’ নামে পরিচিত এলাকায় জড়ো হন জিম্মিদের স্বজনরা। তারা সরকারের কাছে দাবি জানান, যেন কোনও অবস্থাতেই যুদ্ধবিরতি চুক্তি ব্যর্থ না হয়।
অপরিকল্পিত ওই সমাবেশে প্রায় দুই হাজার মানুষ অংশ নেন। বিক্ষোভকারীদের মধ্যে সোশানা ব্রিকম্যান নামের এক ব্যক্তি বলেন, “সেখানে (হামাসের বন্দিদশায়) যাদের থাকার কথা নয়, তাদের সবার ঘরে ফেরা উচিত।”
হামাস তাদের ঘোষণার কারণ ব্যাখ্যা করে বলেছে, বন্দি বিনিময়ের নির্ধারিত সময়ের পাঁচদিন আগেই তারা এই ঘোষণা দিয়েছে, যেন মধ্যস্থতাকারীরা ইসরায়েলকে চুক্তির শর্ত যথাযথভাবে মানতে বাধ্য করতে পারেন এবং বিনিময় প্রক্রিয়া সময়মতো সম্পন্ন হয়।
এদিকে, হামাসের এই ঘোষণার প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ অভিযোগ করেছেন যে, হামাস যুদ্ধবিরতি চুক্তির শর্ত লঙ্ঘন করেছে। তিনি সেনাবাহিনীকে সর্বোচ্চ সতর্কতা বজায় রাখতে এবং অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা নিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়েছেন।
এক ইসরায়েলি কর্মকর্তা জানিয়েছেন, মঙ্গলবার সকালে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা, জাতীয় নিরাপত্তা ও পররাষ্ট্র বিষয়ক মন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠক করবেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।
রয়টার্সকে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, দুইজন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মিসরীয় নিরাপত্তা কর্মকর্তা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে, যুদ্ধবিরতি চুক্তিটি ভেঙে পড়তে পারে। কাতার ও মিসরের মধ্যস্থতায় এবং যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনে দীর্ঘ প্রচেষ্টার পর গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকর করা সম্ভব হয়েছিল।
চুক্তিটি তিন ধাপে সম্পন্ন হওয়ার কথা রয়েছে। প্রথম ধাপে ৩৩ জন জিম্মিকে মুক্তি দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল, যাদের মধ্যে এখন পর্যন্ত ২১ জন ছাড়া পেয়েছেন। এর বিনিময়ে ইসরায়েল কয়েকশ ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দিয়েছে, যাদের মধ্যে অনেকে ইসরায়েলে হামলার দায়ে দীর্ঘ কারাদণ্ড ভোগ করছিলেন।