বাংলাদেশ সেনাবাহিনী মহান মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক জেনারেল এম এ জি ওসমানীর (অবঃ) ৪১তম মৃত্যুবার্ষিকী যথাযথ মর্যাদায় পালন করেছে। বিভিন্ন সংগঠনও নানা আয়োজনের মাধ্যমে দিনটি উদযাপন করেছে।
রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) ১৭ পদাতিক ডিভিশনের জেনারেল অফিসার কমান্ডিং (জিওসি) ও সিলেট এরিয়া কমান্ডার মেজর জেনারেল আ স ম রিদওয়ানুর রহমান, এডব্লিউসি, এএফডব্লিউসি, পিএসসি, জি যথাযথ সামরিক মর্যাদায় হযরত শাহজালাল (র.) মাজার সংলগ্ন জেনারেল এম এ জি ওসমানীর (অবঃ) সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এ সময় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একটি চৌকস দল গার্ড অব অনার প্রদান করে। পরে তাঁর রুহের মাগফেরাত এবং দেশ ও জাতির মঙ্গল কামনায় মোনাজাত করা হয়। অনুষ্ঠানে সিলেট এরিয়ার ঊর্ধ্বতন সামরিক কর্মকর্তা, সেনাবাহিনীর অন্যান্য সদস্য, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও গণমাধ্যম কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সিলেট জেলা ও মহানগর ইউনিটের উদ্যোগে এবং মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সিলেট জেলা ইউনিট কমান্ডের প্রতিষ্ঠাতা কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেম খানের পৃষ্ঠপোষকতায় আলোচনা সভা, মিলাদ ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। বিকেলে নগরীর জিন্দাবাজারস্থ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ হলে এই অনুষ্ঠান হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন মুক্তিযোদ্ধা মীর্জা জামাল পাশা এবং পরিচালনায় ছিলেন মহানগর ইউনিট কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস শহিদ খান। অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবীর ওসমানী গবেষণা ইনস্টিটিউটের চেয়ারম্যান এম এ মালেক খান। অন্যান্য বক্তাদের মধ্যে ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মনাফ খান, জমির উদ্দিন, রইছ আলী, মছদ্দর আলী এবং যুব সংগঠক মো. নজরুল ইসলাম। বক্তারা বঙ্গবীর ওসমানীর জীবন ও স্বাধীনতা যুদ্ধে তাঁর অবদানকে পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানান। মিলাদ মাহফিল ও মোনাজাত পরিচালনা করেন মুফতি মাওলানা রশিদ আহমেদ জামালগঞ্জী।
বঙ্গবীর জেনারেল এম এ জি ওসমানী জন্ম ও মৃত্যুবার্ষিকী উদ্যাপন পরিষদ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি এডভোকেট এমাদ উল্লাহ শহীদুল ইসলাম শাহীন। তিনি বলেন, "ওসমানী শুধু সামরিক নেতা নন, তিনি ছিলেন এক দূরদর্শী ব্যক্তিত্ব, যাঁর নেতৃত্বে বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করেছে।" অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আলহাজ্ব আতাউর রহমান এবং পরিচালনা করেন মনোরঞ্জন তালুকদার। বিশেষ অতিথিদের মধ্যে ছিলেন মুরারীচাঁদ কলেজের সহযোগী অধ্যাপক শেখ মো. নজরুল ইসলাম, বিএমবিএফ সিলেট বিভাগের সিনিয়র সহ-সভাপতি এম আসাদুজ্জামান, ফুলকলি ফুড প্রোডাক্টস লিমিটেডের ডিজিএম জসিম উদ্দিন খন্দকার, এডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান কামালীসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ।
বঙ্গবীর ওসমানী স্মৃতি সংসদও দিনটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করেছে। সকালে হাফিজ আমির উদ্দীন (রহ.) এতিমিয়া হাফিজিয়া মাদরাসার শিক্ষার্থীদের নিয়ে খতমে কোরআন, বাদ জোহর দরগাহ জামে মসজিদে মিলাদ ও দোয়া মাহফিল এবং তাঁর মাজারে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। স্মৃতি সংসদের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য ডাঃ জহিরুল ইসলাম অচিনপুরী ও প্রফেসর আবুল কালাম আজাদ বঙ্গবীর ওসমানীর জীবন ও অবদান নিয়ে আলোচনা করেন।
বক্তারা ওসমানীর প্রতি রাষ্ট্রীয়ভাবে সম্মান প্রদর্শনের আহ্বান জানান এবং তাঁর জীবনী পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি তোলেন। মিলাদ মাহফিল শেষে ওসমানীর আত্মার মাগফেরাত কামনা এবং দেশ ও জাতির মঙ্গল কামনা করে দোয়া পরিচালনা করা হয়।