• ১৫ই এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ২রা বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ১৭ই শাওয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

মহান আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস আজ

AMZAD
প্রকাশিত ২১ ফেব্রুয়ারি, শুক্রবার, ২০২৫ ১৪:১৯:৪২
মহান আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস আজ

মায়ের ভাষার মান রক্ষায় বায়ান্নর একুশে ফেব্রুয়ারি ঢাকার রাজপথে রক্ত দিয়েছিলেন রফিক, সালাম, বরকতসহ বাংলা মায়ের দামাল ছেলেরা। শহিদের রক্তরঞ্জিত ইতিহাসের ধারাক্রম ধরে বাংলা ভাষা সেদিন মর্যাদার আসনে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।

আজ ২১ ফেব্রুয়ারি সেই মহান আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। বায়ান্নর ইতিহাস বাঙালিকে নিয়ে যায় স্বাধিকার আন্দোলনের পথে; ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের পর স্বাধীন হয় বাংলাদেশ।

একুশের প্রথম প্রহরে রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। রাত ১২টা ৩ মিনিটে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারের বেদিতে শ্রদ্ধা জানান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। এ সময় বেজে ওঠে একুশের গান ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো’-এর অ্যাকুইস্টিক ভার্সন। ১২টা ৬ মিনিটে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার ত্যাগ করেন রাষ্ট্রপতি। এ সময় কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার এলাকা কড়া নিরাপত্তার চাদরে মোড়ানো ছিল।

প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে আসেন রাত ১২টা ৬ মিনিটে। তিনি শহিদ বেদিতে শ্রদ্ধার ফুল অর্পণ করে নীরবে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকেন। পরে রাত ১২টা ১৫ মিনিটে তিনি শহিদ মিনার এলাকা ত্যাগ করেন।

এরপর প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে শহিদ মিনারে শ্রদ্ধা জানান আপিল বিভাগ ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতিরা।

রাত ১২টা ১৮ মিনিটে উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যরা শহিদ বেদিতে শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করেন। উপদেষ্টারা চলে যাওয়ার পরে তিন বাহিনীর প্রধানরা শহিদ বেদিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেন।

এরপর শহিদ মিনার এলাকা উন্মুক্ত করে দেওয়া হয় সাধারণ জনগণের জন্য।

ভাষা আন্দোলনের ৪৬ বছর পর ১৯৯৮ সালের ৯ জানুয়ারি কানাডাপ্রবাসী রফিকুল ইসলাম একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য জাতিসংঘের তৎকালীন জেনারেল সেক্রেটারি কফি আনানকে চিঠি লেখেন। পরে রফিকুল ইসলাম তার সহযোদ্ধা আব্দুস সালামকে সঙ্গে নিয়ে গঠন করেন ‘এ গ্রুপ অব মাদার ল্যাংগুয়েজ অব দ্য ওয়ার্ল্ড’ সংগঠন। এই সংগঠন বায়ান্নর আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ে জোরালো ভূমিকা রাখতে শুরু করে। তাদের প্রচেষ্টায় ১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর ইউনেসকোর সভায় উত্থাপন করা হয় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের প্রস্তাবটি। বিশ্বের ১৮৮টি দেশ এতে সমর্থন জানায়। এতে একুশে ফেব্রুয়ারি দিনটি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি পায়।

এ বছর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ‘টেকসই উন্নয়নের জন্য ভাষাকে গুরুত্ব দিন’।

মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে আজ সারা দেশে নানা কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। জেলা-উপজেলা প্রশাসনের পাশাপাশি বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন নানা আয়োজনে এই দিনটি উদযাপন করবে।

এদিন দেশের সরকারি, বেসরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত সব প্রতিষ্ঠানে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হবে। উত্তোলন করা হবে কালো পতাকা। বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে শহিদদের স্মরণে দোয়া মাহফিল ও বিশেষ প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হবে।