• ৭ই এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ২৪শে চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ৯ই শাওয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

স্বাস্থ্য খাতে সংস্কারের দাবিতে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কমপ্লিট শাটডাউন ঘোষণা

AMZAD
প্রকাশিত ২৪ ফেব্রুয়ারি, সোমবার, ২০২৫ ২১:৩৬:২৬
স্বাস্থ্য খাতে সংস্কারের দাবিতে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কমপ্লিট শাটডাউন ঘোষণা

স্বাস্থ্য খাতে পাঁচ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে অনির্দিষ্টকালের জন্য ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি পালন করছেন দেশের বিভিন্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসকরা, যার মধ্যে রয়েছে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ আরও কয়েকটি প্রতিষ্ঠান।

ইন্টার্ন চিকিৎসকরা পরীক্ষাসহ সব ধরনের একাডেমিক কার্যক্রম বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন। তারা বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ কর্মসূচিও পালন করেছেন।

এদিকে, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান জানিয়েছেন, ইতোমধ্যে চিকিৎসকদের বেশ কিছু সমস্যার সমাধান করা হয়েছে। তিনি মনে করেন, তাদের এই কর্মসূচি প্রত্যাহার করা উচিত।

গতকাল রবিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৮টা থেকে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি শুরু করেন। ইন্টার্ন চিকিৎসক কাউন্সিলের আহ্বানে চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, ময়মনসিংহ, বগুড়া, দিনাজপুরসহ বিভিন্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক ও শিক্ষার্থীরা এতে অংশ নেন।

গতকাল দুপুরে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। তারা পাঁচ দফা দাবির পক্ষে স্লোগান দেন। কর্মসূচির কারণে রোগীদের কিছুটা দুর্ভোগ পোহাতে হলেও জরুরি বিভাগ চালু ছিল।

আজ সোমবার চৌহাট্টার সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সামনে তারা অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন।

আন্দোলনরত চিকিৎসকরা বলেন, “এমবিবিএস ও বিডিএস ডিগ্রিধারীরাই প্রকৃত ডাক্তার। কিন্তু হাসপাতালগুলোতে কর্মরত ম্যাটস ও স্যাকমোরা নামের আগে ডাক্তার শব্দ ব্যবহার করে প্রতারণা করছেন। এটি বন্ধ করতে হবে।”

তারা আরও বলেন, “আমাদের দাবি বারবার জানানো হলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তাই আমরা বাধ্য হয়ে আন্দোলনে নেমেছি।”

আগামীকাল ২৫ ফেব্রুয়ারি এ বিষয়ে মামলার শুনানি হবে। ইন্টার্ন চিকিৎসকরা চান, রায়ের মাধ্যমে নিশ্চিত হোক যে, এমবিবিএস ও বিডিএস ছাড়া কেউ ডাক্তার পরিচয় ব্যবহার করতে পারবেন না।

এদিকে, ইন্টার্ন চিকিৎসক কাউন্সিল এক বিজ্ঞপ্তিতে অভিযোগ করেছে যে, “১৯ ফেব্রুয়ারি ৯০তম বারের মতো উচ্চ আদালতের রায় পেছানো হয়েছে, যা স্বাস্থ্য খাতকে নাট্যমঞ্চে পরিণত করেছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।”

অন্যদিকে, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান বলেন, “প্রথম দাবি, ডাক্তার শব্দের ব্যবহার সংক্রান্ত বিষয়টি দীর্ঘদিন বিচারাধীন। এটির সমাধান আমাদের হাতে নেই। তাই চিকিৎসা বন্ধ করাটা পুনর্বিবেচনা করা উচিত।”

বাকি চারটি দাবির বিষয়ে তিনি জানান, “কিছু দাবির অগ্রগতি হয়েছে, আরও কিছু বিষয়ে কাজ চলছে। চিকিৎসকদের এ বিষয়ে অবহিত করা হয়েছে।”

ইন্টার্ন চিকিৎসকদের পাঁচ দফা দাবি:

১. এমবিবিএস/বিডিএস ছাড়া কেউ ডাক্তার লিখতে পারবেন না। বিএমডিসির বিরুদ্ধে করা রিট ৭২ ঘণ্টার মধ্যে প্রত্যাহার করতে হবে এবং বিএমডিসি নিবন্ধন শুধুমাত্র এমবিবিএস/বিডিএস ডিগ্রিধারীদের দিতে হবে।
2. ওটিসি ড্রাগ লিস্ট আপডেট করতে হবে। এমবিবিএস বা বিডিএস ছাড়া অন্যরা ওটিসি লিস্টের বাইরের ওষুধ প্রেসক্রাইব করতে পারবেন না।
3. ১০ হাজার চিকিৎসক দ্রুত নিয়োগ দিতে হবে। চিকিৎসকদের বিসিএসের বয়সসীমা ৩৪ বছর করতে হবে।
4. ম্যাটস ও মানহীন মেডিকেল কলেজ বন্ধ করতে হবে। ম্যাটস শিক্ষার্থীদের মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে নিয়োগ দিতে হবে।
5. চিকিৎসক সুরক্ষা আইন বাস্তবায়ন করতে হবে।