
সিলেটের বিশ্বনাথ থানার এক উপপরিদর্শক (এসআই) ঘুষ নেওয়ার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর তাকে থানা থেকে প্রত্যাহার করে জেলা পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়েছে। অভিযুক্ত এসআইয়ের নাম আলীম উদ্দিন।
মঙ্গলবার রাতে সিলেটের পুলিশ সুপারের আদেশে এসআই আলীম উদ্দিনকে সিলেট পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়। এর আগে দুপুরের দিকে ফেসবুকে তার ঘুষ নেওয়ার ভিডিও ভাইরাল হয়।
ভিডিওতে দেখা যায়, একটি টিনশেড ঘরের ভেতরে দুজন ব্যক্তি বসে আছেন, সামনে একটি টেবিল। তাদের মধ্যে একজন পুলিশের পোশাক পরিহিত। অপর ব্যক্তির চেহারা দেখা না গেলেও তার কণ্ঠ শোনা যায়। ভিডিওতে দেখা যায়, একজন ব্যক্তি টাকা গুনে পুলিশের হাতে দিচ্ছেন।
ওই সময় ভিডিও করা ব্যক্তি পুলিশ সদস্যকে উদ্দেশ করে বলেন, “বিশ হাজার আছে, রাখুন এখন।” তখন পুলিশ সদস্য জবাব দেন, “বিশই লাগবে।” টাকা দেওয়া ব্যক্তি বলেন, “আমি তো কোর্ট থেকে নকল তুলতে পারতাম না, আপনি যদি এটা দেন তাহলে ভালো হয়।”
এ সময় আরও এক ব্যক্তি পুলিশ সদস্যকে অনুরোধ করতে শোনা যায়। তিনি বলেন, “সোনা মামানু, রেবা।” টাকা দেওয়া ব্যক্তি যোগ করেন, “আপনি যদি দেন, তাহলে আমি বলতে পারব যে কোর্ট থেকে তুলেছি।” পুলিশ সদস্য তখন বলেন, “আমি দিলে সই ছাড়া দেব।”
তদন্ত করে জানা গেছে, গত বছরের ২৮ আগস্ট বিশ্বনাথ থানায় একটি মামলার আসামিদের বিশেষ সুবিধা দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে এসআই আলীম উদ্দিন আসামিপক্ষের কাছ থেকে চার দফায় মোট এক লাখ টাকা ঘুষ নেন। টাকা দেন উপজেলার দেওকলস ইউনিয়নের দাউদপুর গ্রামের ফয়সল আহমদ (৩২)। তবে টাকা নেওয়ার পরও এসআই আলীম উদ্দিন ওই আসামিকে গ্রেপ্তার করেন।
ঘুষ দিয়েও কাজ না হওয়ায় ফয়সল আহমদ টাকা ফেরত চাইলে এসআই তাকে বিভিন্ন মামলায় জড়িয়ে হাজতে পাঠানোর হুমকি দেন। পরে তিনি সিলেটের পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
বিশ্বনাথ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এনামুল হক চৌধুরী জানান, “অভিযুক্ত এসআই আলীম উদ্দিনকে থানা থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। এ ঘটনায় তদন্ত চলছে, দোষী প্রমাণিত হলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”