• ১২ই এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ২৯শে চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ১৪ই শাওয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

মার্কিন শুল্ক পুনর্বিবেচনা চেয়ে ট্রাম্পকে প্রধান উপদেষ্টার চিঠি

AMZAD
প্রকাশিত ০৮ এপ্রিল, মঙ্গলবার, ২০২৫ ১৬:০১:৩৪
মার্কিন শুল্ক পুনর্বিবেচনা চেয়ে ট্রাম্পকে প্রধান উপদেষ্টার চিঠি

মার্কিন শুল্ক পুনর্বিবেচনা চেয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে চিঠি দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

সোমবার (৭ এপ্রিল) চিঠির বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানান, চিঠিতে তিন মাসের জন্য নতুন শুল্ক (৩৭ শতাংশ শুল্ক প্রস্তাব) স্থগিত করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। এই সময়ের মধ্যে অন্তর্বর্তী সরকার কাজ করবে আমদানি বাড়ানোর।

চিঠিতে বলা হয়, আমরা আপনাকে আশ্বস্ত করছি, আপনার বাণিজ্য এজেন্ডা সম্পূর্ণরূপে বাস্তবায়নে সহযোগিতার জন্য প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নেবে বাংলাদেশে। আপনার ঘোষণার পর আমি আমার উচ্চ প্রতিনিধিকে ওয়াশিংটন ডিসিতে পাঠিয়েছি যাতে ১৭ কোটি মানুষের দেশ বাংলাদেশের দ্রুত বর্ধনশীল বাজারে আমেরিকান রপ্তানি উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ানো যায়। আমরাই প্রথম দেশ যারা এ ধরনের ইতিবাচক উদ্যোগ নিয়েছি।

চিঠিতে বলা হয়েছে, আমরাই প্রথম দেশ যারা রপ্তানির ওপর স্থগিতাদেশ তুলে নেওয়ার পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানির জন্য বহু বছরের চুক্তি করেছি। আমাদের কর্মকর্তারা তখন থেকেই বাংলাদেশে আমেরিকান রপ্তানি দ্রুত বাড়ানোর জন্য সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা চিহ্নিত করতে কাজ করছেন। বাণিজ্য উপদেষ্টা আমাদের বিশদ কার্যক্রম নিয়ে মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধির সঙ্গে পারস্পরিক সম্পর্ক জোরদারে কাজ করবেন।

চিঠিতে আরো বলা হয়েছে, বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেড পলিসিকে সমর্থন করবে। যুক্তরাষ্ট্রের তুলা যাতে খুব দ্রুত মার্কেটে আসতে পারে সেই উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।চিঠিতে আরো বলা হয়েছে, আমাদের কর্মপরিকল্পনার মূল ফোকাস তুলা, গম, ভুট্টা, সয়াবিনসহ এ জাতীয় মার্কিন পণ্যগুলির আমদানি উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ানো, যা মার্কিন কৃষকদের আয় ও জীবিকা নির্বাহে অবদান রাখবে। মার্কিন তুলার বাজারে গতি বাড়াতে আমরা বাংলাদেশে বন্ডেড ওয়্যারহাউজিং (গুদামজাতকরণ) সুবিধা চূড়ান্ত করছি, যেখানে যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কমুক্ত সুবিধা থাকবে।

এর আগে বাংলাদেশের পণ্যের ওপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কের হার বাড়ানোর পরিপ্রেক্ষিতে বিষয়টি নিয়ে করণীয় নির্ধারণে আলোচনার জন্য রবিবার (৬ এপ্রিল) অর্থ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে জরুরি বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে দুটি চিঠি পাঠানোর বিষয়ে আলোচনা হয়েছিল। প্রধান উপদেষ্টার পক্ষ থেকে একটি চিঠি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে এবং বাণিজ্য উপদেষ্টার পক্ষ থেকে একটি চিঠি ইউএসটিআর’র কাছে পাঠানো হবে বলে জানানো হয়।

চিঠিতে কী থাকবে, সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে এমন প্রশ্ন করা হলে প্রেস সচিব শফিকুল আলম গতকাল বলেছিলেন, “চিঠিতে কীকীথাকবে, কীধরনের ল্যাঙ্গুয়েজ, সেটা নিয়েই আলোচনা হয়েছে। চার জন উপদেষ্টা ছিলেন, একজন হাই রিপ্রেজেন্টিটিভছিলেন, এক জন স্পেশাল অ্যাম্বাসেডর, আমাদের প্রায় দশ জনের মতো সেক্রেটারি ছিলেন, যারা বড় ব্যবসায়ী তাদের মধ্য থেকে ৪ জন প্রতিনিধি ছিলেন। সবার সঙ্গে কথা হয়েছে, কথা হওয়ার পরই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দুটি চিঠি যাবে।

তিনি আরো বলেন, “চিঠিতে যা-ই থাকুক সেটা আমাদের বিজনেসবান্ধব হবে। আমাদের বাংলাদেশের বিজনেসের স্বার্থটা দেখা হবে। বাংলাদেশের সঙ্গে কম্পিটিটিভ যেসব কান্ট্রি আছে, তাদের চেয়ে আমরা আরো বিজনেসবান্ধব হব, এই চিঠিটা হবে। আরো বেশি বিজনেসবান্ধব হবে, যাতে করে ইউএসএএবং আমাদের জন্য উইন উইন সিচুয়েশন হয় এবং আমাদের জন্য মার্কেট এক্সেসটা যেন আরো বাড়ে।”

তারও আগে, বিষয়টি নিয়ে করণীয় নির্ধারণে শনিবার (৫ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৭টায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় জরুরি বৈঠকে বসেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বৈঠকে শীর্ষস্থানীয় বিশেষজ্ঞ, উপদেষ্টা ও কর্মকর্তারা অংশ নেন।