
মৌলভীবাজারের তরুণ আইনজীবী এডভোকেট সুজন মিয়া হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে জেলা পুলিশ। বৃহস্পতিবার দুপুরে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান পুলিশ সুপার এম কে এইচ জাহাঙ্গীর হোসেন।
তিনি জানান, অগ্রণী ব্যাংকের নিরাপত্তা প্রহরী মিসবাহ রহমানকে হত্যার পরিকল্পনার অংশ হিসেবে সুজন মিয়া ভুলবশত খুন হন। মিসবাহের সঙ্গে পূর্ব শত্রুতার জেরে নজির মিয়া মুজিব নামের একজন ব্যক্তি টাকা দিয়ে ভাড়াটে খুনি নিয়োগ করেন। টার্গেটের ছবি মোবাইলে পাঠিয়ে শনাক্ত করার দায়িত্ব দেন খুনিদের।
ঘটনার দিন বাণিজ্য মেলায় আইনজীবী সুজন মিয়াকে দেখতে পেয়ে ভাড়াটে খুনিরা নজির মিয়াকে ভিডিও কলে দেখিয়ে শনাক্ত নিশ্চিত করে। নজির মিয়া সায় দিলে তারা সুজনকে মিসবাহ ভেবে চটপটির দোকানের পাশে বসা অবস্থায় উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে হত্যা করে।
ঘটনার পর সিসিটিভি ফুটেজ ও প্রযুক্তি বিশ্লেষণ করে বুধবার সদর উপজেলার খালিশপুর গ্রামের নজির মিয়া মুজিবকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে আরও চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারা হলেন— আরিফ মিয়া (রঘুনন্দনপুর), হোসাইন আহমদ সোহান (দিশালোক), লক্ষণ নাইডু (মাথিউরা চা বাগান) এবং আব্দুর রহিম (নেত্রকোনার কাশিপুর)।
পুলিশ সুপার জানান, ঘটনার সঙ্গে জড়িত পলাতক আসামিদের পরিচয় শনাক্ত করা হয়েছে, তবে তদন্তের স্বার্থে তাদের নাম প্রকাশ করা হয়নি।
৬ এপ্রিল রাতে মৌলভীবাজার পৌর এলাকার ফুচকার দোকানের পাশে আইনজীবী সুজন মিয়াকে কয়েকজন দুর্বৃত্ত ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে। পরদিন নিহতের ভাই এনামুল হক সুমন সদর থানায় হত্যা মামলা (মামলা নং-১৫) দায়ের করেন।
একইদিন জেলা আইনজীবী সমিতির পক্ষ থেকেও সুজন মিয়া হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত ও ন্যায়বিচারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সমিতির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট মুজিবুর রহমান মুজিব বলেন, “আমরা বিশ্বাস করি, যথাযথ সময়ে চার্জশিট দাখিল হবে এবং ইনশাআল্লাহ ন্যায়বিচার নিশ্চিত হবে।”
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন প্রবীণ আইনজীবী অ্যাডভোকেট শান্তিপদ ঘোষ, পিপি অ্যাড. আব্দুল মতিন, অ্যাড. জুবায়ের বকশি, অ্যাড. ওয়াহিদ, ফারুক সালাম ও অ্যাড. সুবিনা আক্তার প্রমুখ।