• ১৫ই জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ১লা আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ১৯শে জিলহজ, ১৪৪৬ হিজরি

সুনামগঞ্জে আগাম বন্যার শঙ্কা

হাওরে বোরো ধান দ্রুত কাটার নির্দেশ

AMZAD
প্রকাশিত ১৬ এপ্রিল, বুধবার, ২০২৫ ১২:৪৩:০৪
<h6>সুনামগঞ্জে আগাম বন্যার শঙ্কা</h6> <h4>হাওরে বোরো ধান দ্রুত কাটার নির্দেশ</h4>

দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের হাওর এলাকা, বিশেষ করে সুনামগঞ্জ জেলায় পাকা বোরো ধান চাষিরা এবার আগাম বন্যার ঝুঁকিতে পড়েছেন। বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের সর্বশেষ তথ্যে জানা গেছে, সুরমা, কুশিয়ারা, ভৈরব-কুলাউড়া ও মেঘনা-বাউলাই নদী অববাহিকায় বৃষ্টিপাতের প্রবণতা বেড়েছে। এতে আগামী সাত দিনের মধ্যে নদ-নদীর পানির দ্রুত বৃদ্ধি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে, যা হাওরের বোরো ফসলের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে।

এই পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বিভাগ-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ইমদাদুল হক এক জরুরি বিজ্ঞপ্তিতে হাওরের কৃষকদের দ্রুত পাকা ধান কেটে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে সুনামগঞ্জের ১২টি উপজেলার ১৩৭টি হাওরে বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২ লাখ ২৩ হাজার ৪১০ হেক্টর জমিতে। তবে চাষ হয়েছে তার চেয়েও বেশি—২ লাখ ২৩ হাজার ৫০২ হেক্টর জমিতে। এতে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে প্রায় ১৩ লাখ ৯৬ হাজার ৮০ টন ধান, যার বাজার মূল্য আনুমানিক ৫ হাজার ২ কোটি ৮০ লাখ টাকা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত উপপরিচালক মোস্তফা ইকবাল আজাদ জানিয়েছেন, ইতোমধ্যে প্রায় ৮.১ শতাংশ জমির ধান কাটা সম্পন্ন হয়েছে। হাওরে বর্তমানে ১৬০টি কম্বাইন্ড হারভেস্টার, ১৫টি রিপার মেশিন ও ৭৩ হাজার শ্রমিক ধান কাটার কাজে নিয়োজিত রয়েছেন। ধান কর্তন নির্বিঘ্ন করতে কৃষি বিভাগ থেকে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে সব কর্মকর্তা-কর্মচারীর ছুটি বাতিল করা হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে ধান কর্তনে সহায়তা নিশ্চিত করতে কিছু নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে পর্যাপ্ত শ্রমিক ও যন্ত্রচালিত হারভেস্টার নিশ্চিত করা, প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ও লজিস্টিক সহায়তা নিশ্চিত করা, মাইকিংয়ের মাধ্যমে সচেতনতা বাড়ানো এবং কৃষি বিভাগ ও উপজেলা প্রশাসনের সমন্বয়ে কাজ করা।

ধান কাটার পর তা সংরক্ষণের জন্য পর্যাপ্ত পলিথিন ও ত্রিপল প্রস্তুত রাখার নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে, বৃষ্টিপাত ও পানির স্তর বৃদ্ধির পূর্বাভাসকে গুরুত্ব দিয়ে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

পূর্বের অভিজ্ঞতা অনুযায়ী, এপ্রিলের শেষ দিকে আগাম বন্যায় হাওরের ফসল বহুবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এবারের পরিস্থিতিও কৃষকদের মধ্যে গভীর উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। তবে, প্রশাসন ও কৃষি বিভাগ বলছে, তারা মাঠ পর্যায়ে সক্রিয় রয়েছে এবং প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নিচ্ছে।