• ২২শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ৯ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ২৪শে শাওয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

কুয়েট শিক্ষার্থীদের আমরণ অনশনের ২০ ঘণ্টা পার, প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তায় ক্ষোভ

AMZAD
প্রকাশিত ২২ এপ্রিল, মঙ্গলবার, ২০২৫ ১৬:২৩:৫৩
কুয়েট শিক্ষার্থীদের আমরণ অনশনের ২০ ঘণ্টা পার, প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তায় ক্ষোভ

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) ভিসি প্রফেসর ড. মোহাম্মদ মাছুদের পদত্যাগের একদফা দাবিতে শিক্ষার্থীদের শুরু করা আমরণ অনশন ২০ ঘণ্টা অতিক্রম করেছে। ৩২ জন শিক্ষার্থী অনশনে অংশ নিয়েছেন এবং ধীরে ধীরে অসুস্থ হয়ে পড়লেও কুয়েট প্রশাসনের অবস্থানে এখনও কোনো পরিবর্তন দেখা যায়নি। ফলে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা এখন অন্তর্বর্তী সরকারের হস্তক্ষেপের অপেক্ষায় রয়েছেন।

পূর্বঘোষণা অনুযায়ী সোমবার (২১ এপ্রিল) বিকাল ৩টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার সেন্টারের সামনে ৩২ জন শিক্ষার্থী অনশনে বসেন। তাদের ঘিরে ছিলেন দুই শতাধিক আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী, যারা স্লোগান ও উপস্থিতির মাধ্যমে মনোবল জোগাচ্ছিলেন।

এই কর্মসূচি চলাকালীন রাতে একজন শিক্ষার্থী শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে অনশন থেকে সরে যান এবং আরেকজনকে অভিভাবক নিয়ে যান। বাকিরা এখনও অনশনে অবিচল আছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র কল্যাণ দপ্তর অনশন ভাঙাতে সোমবার সকাল থেকে তৎপরতা চালায়। প্রায় অর্ধশতাধিক শিক্ষক শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনায় বসার চেষ্টা করেন। শিক্ষকরা অনশনরতদের অনুরোধ করেন জুস পান করে আলোচনায় আসার জন্য, তবে কোনো শিক্ষার্থী সে আহ্বানে সাড়া দেননি। চেষ্টা ব্যর্থ হয়ে শিক্ষকরা বলেন, “আমরা আবারও আসব, আলোচনার দরজা সবসময় খোলা।”

তবে শিক্ষার্থীদের বক্তব্য স্পষ্ট—তারা ভিসির পদত্যাগ ছাড়া আন্দোলন থেকে সরে দাঁড়াবেন না। সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২০ ব্যাচের শিক্ষার্থী মো. রাহাতুল ইসলাম বলেন, “আমাদের এক দফা, এক দাবি—ভিসির পদত্যাগ। আমাদের দাবি মানা হলে, অনশন শেষ হবে। না হলে এখানেই আমাদের মৃত্যু হবে।”

তিনি অভিযোগ করেন, “শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করেও আমরা অবহেলিত। আমাদের বিরুদ্ধে মামলা, বহিষ্কার, তদন্ত কমিটি—এসব চাপ দিয়ে আমাদের দমন করার চেষ্টা চলছে। এখন আবার শৃঙ্খলা কমিটির মিটিং ডাকা হয়েছে, যাতে আমরা আলোচনায় বসতে না পারি। এত বাধা পেরিয়ে আমরা আর পেছনে ফিরব না।”

উল্লেখ্য, ছাত্র রাজনীতি বন্ধের দাবিকে কেন্দ্র করে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েটে ছাত্রদল ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এরপর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ২৫ ফেব্রুয়ারি সব আবাসিক হল অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে। পরে ৩৭ জন শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। বর্তমানে এসব ঘটনার তদন্ত ও শাস্তির বিষয়ে সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী শৃঙ্খলা কমিটি কাজ করছে।

শিক্ষার্থীরা বলছেন, দেরিতে হলেও শিক্ষকদের উপস্থিতি এবং সহমর্মিতা তাদের কাছে মূল্যবান, তবে তারা প্রশাসনের প্রকৃত জবাবদিহি ও দায়িত্বশীল পদক্ষেপ চান—যার শুরু ভিসির পদত্যাগ দিয়ে হওয়া উচিত।