• ২২শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ৯ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ২৪শে শাওয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

সবুজ ও টেকসই ভবিষ্যতের জন্য বিশ্বকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান ড. ইউনূসের

AMZAD
প্রকাশিত ২২ এপ্রিল, মঙ্গলবার, ২০২৫ ১৬:১৮:৫২
সবুজ ও টেকসই ভবিষ্যতের জন্য বিশ্বকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান ড. ইউনূসের

ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি সবুজ ও টেকসই পৃথিবী গঠনের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ও নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস। মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) কাতারের দোহায় অনুষ্ঠিত ‘আর্থনা শীর্ষ সম্মেলনে’ তিনি এ আহ্বান জানান।

বক্তৃতায় ড. ইউনূস বলেন, সময় এসেছে এমন একটি বিশ্ব গড়ে তোলার, যা হবে সবুজ, সহনশীল এবং টেকসই। তার মতে, এই ভবিষ্যৎ গঠনে প্রয়োজন জ্ঞান, উদ্ভাবন ও প্রযুক্তির সম্মিলিত প্রয়োগ।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ বর্তমানে একটি নতুন সামাজিক চুক্তি প্রণয়নের উপযুক্ত অবস্থানে রয়েছে। এই চুক্তি হবে ন্যায়বিচার, মর্যাদা ও সমতার ভিত্তিতে, যেখানে রাষ্ট্র, জনগণ এবং বিশেষ করে যুবসমাজ সক্রিয় অংশগ্রহণ করবে।

বাংলাদেশকে একটি “আশার বাতিঘর” হিসেবে গড়ে তোলার প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরে ড. ইউনূস বলেন, এর জন্য সামাজিক ব্যবসা, আর্থিক অন্তর্ভুক্তি এবং মাইক্রো ফাইন্যান্সের ভূমিকা নতুনভাবে মূল্যায়ন করতে হবে। এসব উপায়ের মাধ্যমে প্রান্তিক জনগণের জন্য অর্থনৈতিক সম্ভাবনা সৃষ্টি করা সম্ভব এবং নিশ্চিত করা যাবে টেকসই উন্নয়ন।

তিনি জোর দিয়ে বলেন, এখনই সময় সাহসী সিদ্ধান্ত নেওয়ার। একটি টেকসই ও সহনশীল ভবিষ্যৎ গড়ে তুলতে হলে আর্থিক অন্তর্ভুক্তি এবং প্রান্তিক জনগণের ক্ষমতায়নকে মৌলিক ভিত্তি হিসেবে নিতে হবে।

ড. ইউনূস আরও বলেন, বিশ্ব বর্তমানে নানা হুমকির সম্মুখীন—জলবায়ু পরিবর্তন, ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা, মানবিক সংকট এবং দুর্বল বহুপাক্ষিক সহযোগিতা। আধুনিক প্রযুক্তি এবং নীতিমালার দ্রুত পরিবর্তন অনেক প্রচলিত ধারণাকে অচল করে দিয়েছে। এ প্রেক্ষাপটে আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক সহযোগিতা আরও জোরদার করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।

তিনি বলেন, “চলুন এমন এক পৃথিবী গড়ি, যেখানে কেউ এতটা দরিদ্র থাকবে না যে সে স্বপ্ন দেখতে পারবে না, আবার কোনো স্বপ্ন এত বড় হবে না যে তা পূরণ করা যাবে না। ভবিষ্যৎ উত্তরাধিকার নয়—এটি আমাদের নির্মাণ করতে হবে।”

সম্মেলনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে ড. ইউনূস উদ্ভাবন, সহমর্মিতা এবং সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, কাতার এই সম্মেলনের মাধ্যমে দেখিয়েছে কীভাবে জলবায়ু সংকট, সামাজিক বৈষম্য এবং ভবিষ্যতের কর্মসংস্থানকে উদ্ভাবন, ঐতিহ্য ও অংশীদারিত্ব দিয়ে সামাল দেওয়া যায়।

সম্মেলনের আয়োজকদের ধন্যবাদ জানিয়ে ড. ইউনূস বলেন, কাতার ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন শেখ মোজা বিনতে নাসের এবং ভাইস চেয়ারপারসন ও সিইও শেখ হিন্দ বিনতে হামাদ আল থানির নেতৃত্বে এই আয়োজন একটি দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।

উল্লেখ্য, সম্মেলনের উদ্বোধনী আয়োজনে কাতারের মন্ত্রী ও বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ ড. ইউনূসকে স্বাগত জানান।