• ২৩শে মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ৯ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ২৫শে জিলকদ, ১৪৪৬ হিজরি

রিট খারিজ, হাইকোর্টে ইশরাকের পক্ষে রায়

AMZAD
প্রকাশিত ২২ মে, বৃহস্পতিবার, ২০২৫ ১৬:৩৫:৩৩
রিট খারিজ, হাইকোর্টে ইশরাকের পক্ষে রায়

বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে শপথ না পড়ানোর নির্দেশনা চেয়ে করা রিট খারিজ করেছেন হাইকোর্ট।

বিচারপতি আকরাম হোসেন চৌধুরী ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চ বৃহস্পতিবার সকালে এই আদেশ দেন। এই আদেশের ফলে ইশরাক হোসেনকে শপথ পড়াতে বাধা কেটেছে বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।

হাইকোর্টের আদেশের পর ইশরাকের আইনজীবী এএম মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, “নির্বাচন কমিশনের দেওয়া গেজেটের বৈধতা এবং শপথ পড়ানো থেকে বিরত থাকা নিয়ে রিট খারিজ করে দিয়েছে হাইকোর্ট। এই আদেশের ফলে ইশরাককে মেয়র হিসেবে শপথ পড়াতে বাধা নেই।”

বুধবার বিচারপতি আকরাম হোসেন চৌধুরী ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চ রায় ঘোষণার জন্য বৃহস্পতিবার দিন ধার্য করেছিলেন।

আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মোহাম্মদ হোসেন। ইশরাক হোসেনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন ও ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মাহফুজুর রহমান মিলন ও খান জিয়াউর রহমান।

২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী শেখ ফজলে নূর তাপস মেয়র নির্বাচিত হন। নির্বাচন কমিশন ২ ফেব্রুয়ারি ভোটের ফলাফলের গেজেট প্রকাশ করে। এরপর শপথ নিয়ে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন তাপস। সেই নির্বাচনে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ফল বাতিল চেয়ে ২০২০ সালের ৩ মার্চ মামলা করেন ইশরাক।

গত বছরের আগস্টে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দেশের সব সিটি করপোরেশনের মেয়রদের অপসারণ করা হয়। এরপর ঢাকা দক্ষিণ সিটির প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন অতিরিক্ত সচিব শাহজাহান মিয়া।

গত ২৭ মার্চ ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ২০২০ সালের নির্বাচনে ফজলে নূর তাপসকে বিজয়ী ঘোষণার ফল বাতিল করে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে মেয়র ঘোষণা করেন ঢাকার প্রথম যুগ্ম জেলা জজ ও নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. নুরুল ইসলাম।

আদালত ১০ দিনের মধ্যে গেজেট প্রকাশের নির্দেশ দেন। এ রায় পাওয়ার পর ২৭ এপ্রিল গেজেট প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন।

গেজেট প্রকাশের দিন ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ঘোষণা করে দেওয়া রায় ও ডিক্রির বিরুদ্ধে আপিল করতে আইনি নোটিশ দেন রফিকুল ইসলাম ও মামুনুর রশিদ নামে দুই ব্যক্তি।

নোটিশে গেজেট প্রকাশ এবং ইশরাককে শপথ নেওয়া থেকে বিরত থাকতে বলা হয়। পরে মামুনুর রশিদ হাইকোর্টে রিট করেন।

রিটে গত ২৭ মার্চের রায় এবং ২৭ এপ্রিলের গেজেট কেন বাতিল ও বেআইনি ঘোষণা করা হবে না এবং ইশরাক হোসেনকে শপথ পরিচালনা থেকে বিরত রাখার নির্দেশনা কেন দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারির আর্জি জানানো হয়। এ রুল বিবেচনাধীন থাকা অবস্থায় রায় ও গেজেটের কার্যক্রম স্থগিত চাওয়া হয় রিটে।

আদালতের আদেশের পরও শপথ না পড়ানোয় রাস্তায় নেমে আন্দোলন করেন ইশরাকের সমর্থকরা। এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে তারা দক্ষিণ সিটির নগর ভবনের সামনে অবস্থান নেন। একই দাবিতে বুধবার থেকে কাকরাইল মসজিদের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন ইশরাক সমর্থকরা। মেয়র হিসেবে ইশরাককে শপথ না পড়ানোর পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া ঘোষণা দেন তারা।

এ সময় দাবি না মানা পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন তিনি। আন্দোলনের অষ্টম দিন বৃহস্পতিবার ইশরাক হোসেনকে মেয়র হিসেবে শপথ না পড়ানোর নির্দেশনা চেয়ে করা রিট খারিজ করে দেয় হাইকোর্ট। এর ফলে ইশরাককে শপথ পড়াতে বাধা কেটে যায় বলে জানান তার আইনজীবী।