• ২৪শে মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ১০ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ২৬শে জিলকদ, ১৪৪৬ হিজরি

লাফার্জহোলসিম এর উদ্যোগে ছাতকের নোয়ারাই ইউনিয়নে পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম অনুষ্ঠিত

AMZAD
প্রকাশিত ১৭ নভেম্বর, রবিবার, ২০২৪ ২২:০১:১৮
লাফার্জহোলসিম এর উদ্যোগে ছাতকের নোয়ারাই ইউনিয়নে পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম অনুষ্ঠিত

প্রেস বিজ্ঞপ্তি : লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ পিএলসি’র উদ্যোগে গতকাল (১৬ নভেম্বর, ২০২৪) ছাতকের সুরমা প্ল্যান্টের পার্শ্ববর্তী গ্রামগুলোর জনসাধারণকে সাথে নিয়ে একটি পরিচ্ছন্নতা অভিযান কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়েছে। এর আওতায় এলাকার বিভিন্ন পাবলিক প্লেস থেকে পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর পলিথিন ও প্লাস্টিক জাতীয় পণ্য সংগ্রহ করে টেকসই উপায়ে ব্যবস্থাপনা করার জন্য কোম্পানিটির ‘জিওসাইকেল’ প্ল্যান্টে প্রেরণ করা হয়।

‘জিওসাইকেল’ হোলসিম গ্রুপের একটি টেকসই বর্জ্য ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি যা বিশ্বের ৫০টিরও বেশি দেশে বিভিন্ন ধরনের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা করছে।

পরিচ্ছন্নতা অভিযান এর পাশাপাশি জনসাধারনকে ‘জিওসাইকেল’ এর কার্যক্রম সম্পর্কে ধারণা দেন কোম্পানিটির ইন্ডাস্ট্রিয়াল ডিরেক্টর অমিতাভ সিং এবং অন্যান্যরা। এরপর তাদেরকে নিয়ে যাওয়া হয় ‘জিওসাইকেল’ প্ল্যান্টে।

দীর্ঘদিন ধরেই এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে সিমেন্ট প্ল্যান্টে কীভাবে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা হয় তা নিয়ে আগ্রহ ছিল। এই আয়োজনের মাধ্যমে তাদের সেই দীর্ঘদিনের আগ্রহ মিটেছে বলে জানান পরিচ্ছন্নতা অভিযানে অংশ নেয়া ছাতকের বাসিন্দা বঙ্কিম আচার্য। তাঁর ভাষায় “সুরমা প্ল্যান্টে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা হয় জানতাম, কিন্তু কীভাবে এটি করা হয় তা আমাদের জানা ছিল না। আজ আমরা এই বর্জ্য ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি দেখে অবাক হয়েছি। এতো নিয়ন্ত্রিত উপায়ে পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর পদার্থগুলো কো-প্রসেস করা হয় তা নিজের চোখে দেখে আমরা অভিভূত।”

লাফার্জহোলসিম এর ইন্ডাস্ট্রিয়াল ডিরেক্টর অমিতাভ সিং বলেন, “বাংলাদেশে জিওসাইকেল এর আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয় ২০১৭ সালে। প্রতি বছর জিওসাইকেল প্ল্যান্টের মাধ্যমে প্রায় ৫০ হাজার টন বিভিন্ন ধরনের বর্জ্য কো-প্রসেস করা হয়ে থাকে।”

কোম্পানিটির সিনিয়র ম্যানেজার- জিওসাইকেল লতিফুর রহমান বলেন, “আমরা সপ্তাহজুড়ে জিওসাইকেল উইক পালন করছি। এর অংশ হিসেবে স্থানীয় জনসাধারনের মাঝে বর্জ্য নিয়ে সচেতনতা তৈরি করতেই এই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।”

ছাতকের বিভিন্ন ধরনের বর্জ্য টেকসই উপায়ে ব্যবস্থাপনা করার লক্ষ্যে স্থানীয়দের নিয়ে কাজ করবে বলেও জানিয়েছে লাফার্জহোলসিম।

টেকসই উপায়ে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বাংলাদেশের জন্য সবসময়ই একটি কঠিন চ্যালেঞ্জ হিসেবে প্রতীয়মান হয়ে আসছে। বিশ্ব ব্যাংকের ২০১৯ সালের প্রতিবেদন অনুযায়ী বাংলাদেশে শুধুমাত্র শহরগুলোতে প্রতিদিন ২৫,০০০ টনেরও বেশি বর্জ্য সৃষ্টি হচ্ছে, যা ১৯৯১ সালে ছিল ৬,৫০০ টন এবং ২০০৫ সালে ছিল ১৩,০০০ টন। দ্রুত নগরায়নের সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে বর্জ্য। প্রতি ১৫ বছরে দ্বিগুন হচ্ছে এর পরিমান। এই বর্জ্যের প্রায় ৫৫ শতাংশ অসংগৃহীতই থেকে যায়। যা সংগ্রহ করা হয় তার একটা বড় অংশ পুড়িয়ে ফেলা হয় কিংবা মাটিতে পুঁতে ফেলা হয়, যা পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। এই পরিস্থিতি মোকাবেলায় বাংলাদেশে টেকসই বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সমাধান নেই বললেই চলে। একটি সুন্দর ও সবুজ দেশ কিংবা নগরী নির্মাণে ‘জিওসাইকেল’ এর মতো টেকসই বর্জ্য ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলেই মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

এ বছরের শুরু থেতে সিলেট সিটি করপোরেশন এর লালমাটিয়া ডাম্পিং গ্রাউন্ড থেকে মিউনিসিপ্যাল সলিড ওয়েস্ট ‘জিওসাইকেল’ প্ল্যান্টে কো-প্রসেস করা শুরু হয়েছে। এর জন্য সিলেটে স্থাপন করা হয়েছে সর্বাধুনিক প্রযুক্তির একটি ম্যাটেরিয়াল রিকভারি ফ্যাসিলিটি যার মাধ্যমে অপচনশীল এবং নন-রিসাইক্লেবল পণ্য পৃথক করে প্রেরণ করা হয় লাফার্জহোলসিম এর ‘জিওসাইকেল’ প্ল্যান্টে। বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত এটাই এখন পর্যন্ত এধরনের একমাত্র প্ল্যান্ট। দেশের অন্যান্য সিটি করপোরেশনগুলোর জন্য এই প্ল্যান্ট এবং এই পদ্ধতিতে মিউনিসিপ্যাল সলিড ওয়েস্ট ব্যবস্থাপনা একটি মডেল হতে পারে।

পরিচ্ছন্নতা অভিযানে কোম্পানিটি’র প্ল্যান্ট ম্যানেজার অরুন সাহা, কান্ট্রি সিকিউরিটি ম্যানেজার ও হেড অব প্ল্যান্ট করপোরেট অ্যাফেয়ার্স আতাউর রহমান, কান্ট্রি ইনভায়ারনমেন্ট ম্যানেজার মোহাম্মদ মহিউদ্দীন, সিনিয়র ম্যানেজার- প্রসেস অ্যান্ড পারফরমেন্স ইন্দিরা সাহা, ডেপুটি ম্যানেজার- জিওসাইকেল তামরিন চৌধুরী ও ডেপুটি ম্যানেজার- করপোরেট অ্যাফেয়ার্স ও কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট মোহাম্মদউল্লাহ সহ অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ অংশ নেন।