• ৮ই এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ২৫শে চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ১০ই শাওয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

ছাত্রদলকে হাসনাত আবদুল্লাহ হুশিয়ারী

AMZAD
প্রকাশিত ১৯ ফেব্রুয়ারি, বুধবার, ২০২৫ ১৬:৩৭:৩৫
ছাত্রদলকে হাসনাত আবদুল্লাহ হুশিয়ারী

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) সংঘর্ষের পর ‘কুয়েটের শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রদলের সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে’ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। এই কর্মসূচি থেকে ছাত্রদলকে জালিম (অত্যাচারী) না হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘গত ১৬ বছরে নির্যাতনের কথা ভুলে যাবেন না। চাপাতির রাজনীতি ক্যাম্পাসে আবার রিইনস্টল (পুনরায় প্রতিষ্ঠা) করতে চাইলে ছাত্রলীগ গেছে যে পথে, আপনারা যাবেন সে পথে।’

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা–কর্মীরা বিক্ষোভ করে। পরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন রাজু ভাস্কর্য থেকে মিছিল নিয়ে ভিসি চত্বর ঘুরে পুনরায় রাজু ভাস্কর্যে আসে। মিছিলে ‘কুয়েটে রক্ত ঝরে, ওয়াসিম তোমায় মনে পড়ে’, ‘শিক্ষা–সন্ত্রাস একসাথে চলে না’ প্রভৃতি বলে স্লোগান দেওয়া হয়। মিছিল শেষে রাজু ভাস্কর্যে বিক্ষোভ সমাবেশ হয়।

সমাবেশে ছাত্রদলের উদ্দেশে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘গত ১৬ বছরে যে নির্যাতন হয়েছে, আপনারা মজলুম ছিলেন, আপনারা জালিম হবেন না। মজলুম জালিম হলে পৃথিবী বসবাসের অযোগ্য হয়ে যায়। ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াইকে সম্মান জানাই। একই সঙ্গে মনে করিয়ে দিতে চাই, আবার যারা ছাত্রলীগ হয়ে উঠতে চাইবে, শিক্ষার্থীদের বিপক্ষে অবস্থান নেবে, তাদের পরিণতি ছাত্রলীগের মতোই হবে।’

গণতন্ত্রে উত্তরণের লড়াই সমন্বিত লড়াই উল্লেখ করে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘শহীদদের রক্তের দায় আমাদের ওপরও রয়েছে। শহীদদের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে মাদার পার্টির এজেন্ডা বাস্তবায়নের রাজনীতি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে রিইনস্টল করতে পারি না। শিক্ষার্থীদের জন্য রাজনীতি করতে চাইলে তাঁদের ভাষায় কথা বলতে হবে, তাঁদের মতো চলতে হবে। কিন্তু আপনারা যদি আবার ক্যাডার পলিটিকস করতে চান, হল দখল, সিট বাণিজ্য, চাঁদাবাজি করতে চান, আপনাদের পরিণতি হবে সাদ্দাম–ইনানের (নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক) মতো।’

গেস্টরুম ও চাঁদাবাজির স্বপ্ন আর বাংলাদেশে বাস্তবায়িত হবে না–মন্তব্য করে হাসনাত আবদুল্লাহ আরও বলেন, ‘আমরা চাই না কোনো ছাত্রসংগঠন শিক্ষার্থীদের টুঁটি চেপে ধরুক। হলগুলো হবে শিক্ষার্থীদের অবারিত বিচরণের ক্ষেত্র।’

সমাবেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমম্বয়ক আবদুল কাদের বলেন, জুলাই–পরবর্তী বাংলাদেশে কোনো দখলদারত্বের ঠাঁই হবে না। বিশ্ববিদ্যালয়ে যেমন ছাত্ররাজনীতির দরকার আছে, তেমনি শিক্ষার্থীদের উদ্বেগগুলো নিয়েও কাজ করতে হবে। জোরজবরদস্তি করে যারা রাজনীতি খাওয়ানোর চেষ্টা করে, তাদের পরিণতি ছাত্রলীগের মতো হবে।

আবদুল কাদের আরও বলেন, ‘ছাত্রলীগ তো অনেক পরাক্রমশালী ছিল, তাদের আমরা ঝেঁটিয়ে বিদায় করেছি। আমরা ছাত্রদলকে ক্যাম্পাসে নিয়ে এসেছি, তারা যদি আবার শিক্ষার্থীদের ওপর হাত দিতে চায়, আমরা তাদেরও প্রতিরোধ করব।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের বিক্ষোভ কর্মসূচির দিকে ইঙ্গিত করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক আরেক সমন্বয়ক আবু বাকের মজুমদার বলেন, ‘যারা কুয়েটে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করেছে, তারা এখানে (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে) নাটক করতে এসেছে। আমরা এই নাটক দেখতে চাই না। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি অনুরোধ করছি, যারা হামলা করেছে, তাদের যেন গ্রেপ্তার করা হয়।’

জুলাইয় আন্দোলনে ছাত্রলীগের হামলা এবং কুয়েটে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ভিডিও চিত্র আগামীকাল বুধবার বিকেলে টিএসসিতে প্রদর্শনী করার ঘোষণা দেন আবু বাকের মজুমদার।

সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক রিফাত রশীদ, হাসিব আল ইসলাম, রাফিয়া রেহনুমা, নিশিতা জামানসহ বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী।