নিজস্ব প্রতিবেদক : সিলেট নগরের শাহপরান এলাকায় প্রতিপক্ষের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে বিলাল আহমদ মুন্সী (৩৫) নামের এক যুবদল কর্মী নিহত হয়েছেন। এ ঘটনার প্রতিবাদে আজ মঙ্গলবার দুপুরে লাশ নিয়ে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। পরে পুলিশ হত্যাকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তিদের বিচারের আশ্বাস দিলে প্রায় ২০ মিনিট পর সড়ক ছেড়ে দেন অবরোধকারীরা।
নিহত বিলাল আহমদ নগরের ৩৪ নম্বর ওয়ার্ডের খাদিম বহর আবাসিক এলাকার জহুরুল ইসলামের ছেলে। বিলায় পেশায় একজন রংমিস্ত্রি। ওয়ার্ড যুবদলের কর্মী হিসেবে পরিচিত তিনি। গতকাল সোমবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে প্রতিপক্ষের হামলায় বিলাল নিহত হন।
বিলাল আহমদের স্ত্রী ও দুই সন্তান রয়েছে। তাঁর বড় সন্তান স্থানীয় একটি মাদ্রাসায় চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ে, দ্বিতীয় সন্তানের বয়স ১০ মাস।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, কিছুদিন আগে দুই স্কুলছাত্রের ঝগড়া আর তর্কাতর্কির জেরে শাহপরান এলাকায় যুবদল-ছাত্রদলের নেতৃত্বে স্থানীয় মানুষের মধ্যে দুটি পক্ষ তৈরি হয়। এ নিয়ে উভয় পক্ষে মনোমালিন্য ও উত্তেজনা চলছিল। এরই জেরে সোমবার রাতে দুই পক্ষে সংর্ঘষ হয়। এ সময় যুবদল-ছাত্রদলের কিছু নেতা-কর্মী ধারালো অস্ত্র দিয়ে বিলাল হোসেনকে উপর্যুপরি কুপিয়ে আহত করে।
পুলিশ জানিয়েছে, গুরুতর আহত অবস্থায় বিলালকে উদ্ধার করে এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান স্থানীয় লোকজন। সেখানে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে বিলালের মৃত্যু হয়েছে বলে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন।
ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে ময়নাতদন্তের পর আজ মঙ্গলবার বেলা সোয়া দুইটার দিকে বিলালের লাশ শাহপরান মাজার গেট এলাকায় নিয়ে আসা হয়। তখনই লাশ নিয়ে একদল মানুষ সিলেট-তামাবিল আঞ্চলিক মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন। এ সময় বিক্ষুব্ধরা খুনিদের গ্রেপ্তারের দাবি জানান। এ সময় তাঁরা প্রতিবাদী মানববন্ধন কর্মসূচিও পালন করেন। পরে পুলিশের আশ্বাসে অবরোধ প্রত্যাহার করেন।।
মঙ্গলবার বেলা চারটা পর্যন্ত বিলাল খুনের ঘটনায় কোনো মামলা হয়নি বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে।
সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (গণমাধ্যম) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, বিলাল হত্যার ঘটনায় সন্দেহভাজন হিসেবে ছয়জনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্তের পাশাপাশি হত্যার পেছনের কারণও অনুসন্ধান করছে পুলিশ।
আজ দুপুরে সড়ক অবরোধকালে স্থানীয় বিএনপি এবং অঙ্গসহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা অভিযোগ করেন, বিলালকে স্থানীয় আওয়ামী লীগের চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা হত্যা করেছে। বিক্ষুব্ধরা আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে প্রকৃত খুনিদের গ্রেপ্তারের দাবি জানান।
দলীয় কোনো কোন্দলে নয়, স্থানীয় দুই পক্ষের দ্বন্দ্বের জেরে বিলালকে হত্যা করা হয় অভিযোগ করে তাঁর বড় ভাই মোস্তাক আহমেদ বলেন, হত্যাকাণ্ডে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির ঘরানার ব্যক্তিরা জড়িত ছিলেন। ‘টেম্পু মঈন’ ও তাঁর তিন ছেলের নেতৃত্বে বিলালকে হত্যা করা হয়। ‘টেম্পু মঈন’ ও তাঁর দুই ছেলে আওয়ামী লীগ করেন, আরেক ছেলে বিএনপির রাজনীতিতে জড়িত। তাঁদের সঙ্গে হত্যাকাণ্ডে বিএনপি নেতা দেওয়ান রফিকও জড়িত ছিলেন।